শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান মির্জা ফখরুলের

নতুন সঙ্কট সৃষ্টি না করে নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যমান সব সমস্যা শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

এ সময় তিনি বলেন, কোন মামলার রায় কবে হবে এটা এখন আর বিচারকরা নন, দেশের আইনমন্ত্রী স্থির করেন। গত ক’দিন ধরেই মিডিয়ায় সরকারপ্রধান, সেতুমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী এবং সরকারি দলের ছোট-বড় নেতাদের যে বক্তব্য সবচেয়ে বেশি প্রচারিত হচ্ছে হলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জড়িত।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১১ সালে পুলিশ রিপোর্ট পেশ হওয়ার আগেই তৎকালীন আইনমন্ত্রী প্রকাশ্য জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন, গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানকে জড়িত করা হবে। হয়েছেও তাই। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রায় হওয়ার আগেই কি করে বলতে পারেন যে এই মামলার রায় হওয়ার পর বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে পড়বে। এর অর্থ হলো তিনি জানেন কী রায় হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রেড এলার্ট জারি করেছিল। পরবর্তীতে ইন্টারপোলের প্রধান কার্যালয় প্রয়োজনীয় তদন্ত করে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তারেক রহমানের কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে গত ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ লিখিতভাবে সেই রেড এলার্ট প্রত্যাহার করে। রাজনৈতিক কারণে তারেক রহমানকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়ার আওয়ামী ইচ্ছা পূরণ হয়নি- হবেও না ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ও দুর্বল করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেই দলীয় একজন নেতাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে মামলার অন্যতম আসামিকে দিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করেছিল। কিন্তু সেই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করে মুফতি হান্নান সরকারের ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিয়েছে। এখন তারা বিচার বিভাগকে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ইচ্ছা পূরণের অপচেষ্টায় রত হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

দলের মহাসচিব বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে এর বিষময় পরিণতি সম্পর্কে ফের ভাবার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছি। অন্যায়ভাবে মিথ্যা অভিযোগে খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দিয়ে সরকার জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেশে জনগণের মধ্যে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি করবে, যা কারো জন্যই প্রত্যাশিত নয়। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে দেশের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজনীয় মনে করি। নতুন সংকট সৃষ্টির পরিবর্তে সরকারের উচিত বিদ্যমান সমস্যাদি সমাধানের উদ্দেশ্যে ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন।